চকরিয়ায় সাঈদীর গায়েবি জানাজায় জামায়াত কর্মী নিহত ; হামলা ও ভাংচুর

মো. কামাল উদ্দিন, চকরিয়া •

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ ফোরকান নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

মোহাম্মদ ফোরকান চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল ফজলের ছেলে।

এ ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে আরও ১৩ জন। আহতদের মধ্যে চকরিয়া থানা পুলিশর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৬ পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ছৈয়দ ইফতেখারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এক ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। একই সঙ্গে গুলিবিদ্ধসহ ৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টায় চকরিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড নামার চিরিংগা এলাকায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ।

তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তিনিসহ পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে করছে। তবে দুই পক্ষের মধ্যে কে কোন দলের তা নিশ্চিত নন তিনি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চকরিয়ায় জানাজা নিয়ে সংঘটিত সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। তবে গুলি বর্ষণ পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি। এতে হতাহত কতজন তা বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

চকরিয়ার স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানিয়েছে, চকরিয়া সরকারি হাই স্কুল মাঠে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা করার পূর্ব ঘোষণা দেওয়া হলেও প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখানে জানাজা পড়তে দেয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে বিকাল সাড়ে ৪টায় কয়েক হাজার লোক চকরিয়া পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ডের নামার চিরিংগা এলাকায় জড়ো হয়ে জানাজা শুরু করে। এ সময় অজ্ঞাত মুখোশধারী অর্ধশত লোক সেখানে গুলি বর্ষণ শুরু করে। তখন জানাজা পণ্ড হয়ে গেলে অজ্ঞাত লোকজন গুলি বর্ষণ করতে করতে লাঠি দিয়ে কয়েকজনকে মারধর করে। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই এসব লোকজন পালিয়ে যায়। পরে জানাজায় আসা লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এদিকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, নিষেধ করা সত্ত্বে ও স্থান পরিবর্তন করে গায়েবানা জানাজা পড়ে তারা। পরে মিছিল নিয়ে পৌর শহরের মহাসড়কে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশ ও পাবলিকের গাড়ি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মৃত্যুর ব্যাপারে ইউএনও বলেন, হয়তো নিজেদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তা তদন্ত করে দেখা হবে।